রুআহা (ঋজুদা) – বুদ্ধদেব গুহ
এক
বাড়ি ফিরতেই মা বললেন, তোকে ঋজু ফোন করেছিল।
কিছু বলেছে?
তোকে ফোন করতে বলেছে।
সঙ্গে সঙ্গে বই-খাতা ফোনের টেবিলেরই একপাশে নামিয়ে রেখে ফোন করলাম।
একবার বাজতেই ফোনটা ধরল ঋজুদা। বলল, কে রে? রুদ্র?
হ্যাঁ। ফোন করেছিলে কেন?
অ্যালবিনো।
মানে?
মুলিমালোঁয়া থেকে বিষেণদেওবাবু এসেছেন। আমার এখানেই আছেন। ভানুপ্রতাপ অ্যারেস্টেড। জামিন পায়নি। যেভাবে পুলিশ কেস সাজিয়েছে প্রমাণ-সাবুদ দিয়ে, তাতে ফাঁসি না-হলেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অবধারিত।
বললাম, আহা! এখন যেন দুঃখ হচ্ছে তোমার! কী?
ভানুপ্রতাপ তো প্রায় তোরই সমবয়সী ছিল। দুঃখ কি আর তোরই হচ্ছে না?
জানি না।
বিষেণদেওবাবু তোকে দেবার জন্যে ওঁর গ্রীনার বন্দুকটা আর একটা পয়েন্ট-টু-সেভেন-ফাইভ রাইফেলও নিয়ে এসেছেন। বলতে গেলে, একেবারেই নতুন। লাইসেন্স করাতে হবে। আর শোন, আজকে রাতে আমার এখানে খাবি তুই। আরও একটা ভীষণ খবর আছে।
কী?
খবর পেলাম, ভুষুণ্ডাকে নাকি পুব-আফ্রিকার তানজানিয়ার আরুশা শহরে দেখা গেছে। আমার খোঁড়া-পায়ের বদলা নেবার সময় এসেছে। আবার গুগুনোগুম্বারের দেশে যেতে হবে। বুঝেছিস?
সত্যি? আমি খুব উত্তেজিত গলায় বললাম। কবে যাচ্ছি আমরা?
যে-কোনদিন গেলেই হল। কিন্তু একটা মাইনর প্রবলেম দেখা দিয়েছে।
প্রবলেম? কী প্রবলেম?
একজন সুন্দরী মহিলা আমাদের সঙ্গী হতে চান।
মহিলা? আমার নাক কুঁচকে গেল। আফ্রিকার জঙ্গলে ভুষুণ্ডার সঙ্গে মোকাবিলা করতে যাবে মহিলা নিয়ে? নিজেই তো গতবার মরতে বসেছিল! আর
বললাম, ইমপসিবল। তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। আমি যাব না তাহলে!
আহা! তুই যে এত বড় মেশভিনিস্ট হয়ে উঠেছিস, তা তো জানতাম না। তবে, আমিও যে মহিলা-টহিলাদের একেবারেই পছন্দ করি না তা তো তুই জানিসই। তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ এই যে, মহিলা ছাড়া কারো সঙ্গে পুরুষের বিয়ে হয় না বলে আমার তো বিয়েই করা হল না। তবে এই মহিলার রাইফেলের হাত শুনছি নাকি তোর চেয়েও ভাল। গাড়িও চালাতে পারে। ইংরিজি ও ফ্রেঞ্চ ছাড়া, সোয়াহিলিও জানে নাকি একটু-একটু। একেবারে নাছোড়বান্দা! কী করি বল তো রুদ্র? মহা মুশকিলেই পড়েছি।
আমার মাথার মধ্যে বান্টুদের ড্রাম বাজছিল। রাগে কান ঝাঁ-ঝাঁ করছিল। বললাম, কী বললে তুমি একটু আগে? আমার চেয়েও ভাল হাত রাইফেলে? একজন মহিলার? তা তো তুমি বলবেই। ওয়ান্ডারাবোদের হাত থেকে তোমাকে বাঁচিয়ে আনলাম আর তুমি এ-কথা বলবে না! তুমি আজকাল সত্যি খুবই অকৃতজ্ঞ হয়ে যাচ্ছ।
মনে হল, একটু চাপা হাসি হাসল ঋজুদা। বলল, আহা, চটছিস কেন? তুই অ্যাপ্রুভ না করলে তো আর সে আমাদের সঙ্গে যেতে পারছে না। আমি তাকে বলেই দিয়েছি যে, তুই-ই হলি ডিরেক্টর অব অপারেশানস্। তোর কথাই শেষ কথা! তুই-ই আমার মালিক।
এমন গ্যাস দিতে পারো না তুমি!
একটু চুপ করে থেকে বললাম, ভটকাই বেচারার কত যাবার ইচ্ছা ছিল।
ও তো রাইফেলবন্দুক ধরতে পর্যন্ত পারে না। ওর জীবনের দায়িত্ব কে নেবে? তুই? ভটকাইকে নিয়ে যাব তখনই, যখন অ্যালবিনোর মতো কোনো রহস্য-টহস্য ভেদ করার ভার পড়বে আবার আমাদের উপর। ভটকাই, বৰ্ণ-গোয়েন্দা তোরই মতো। ভটকাইকে তালিম-টালিম দিয়ে তোর চেলা বানিয়ে ফ্যাল। তারপর–
আমার ভীষণ রাগ হয়ে গেছিল মহিলার কথা শুনে। বললাম, নাম কী সেই মহিলার? বয়স কত?
বলছি, বলছি, সবই বলছি। বয়সে তোর চেয়ে সামান্য ছোট, দেখতে একেবারে মেমসায়েবের মতো। আর নাম হচ্ছে তিতির!
তিতির? মানে? মডার্ন হাই স্কুলের? তাকে তো আমি খুবই চিনি। প্রযত সেনের বোন? সে কোত্থেকে এসে ভিড়ে গেল তোমার কাছে? যাব্বাবাঃ। মহা ন্যাকা, নাক-উঁচু মেয়ে। না, ঋজুদা! তাকে সঙ্গে নিলে আমিই যাব না।
আঃ। এত কথা পরেই হবে’খন। তুই আয়ই না সন্ধেবেলা। বলেই বলল, রুদ্র, গদাধর তোকে জিজ্ঞেস করছে, কী রান্না করবে? কী খাবি?
আমি রেগে বললাম, জানি না। খাব না। মেয়ে! আফ্রিকার জঙ্গলে মেয়ে!
দেরি করিস না। সাতটার মধ্যে আসিস কিন্তু। আজকাল তো রোজই ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে বিকেলের দিকে।
বলেই, ফোন ছেড়ে দিল ঋজুদা।
মা আমার উত্তেজনা লক্ষ করেছিলেন। বললেন, কোন্ তিতির?
মডার্ন গার্লস স্কুলের ভারী নাক-উঁচু মেয়ে একটা। দ্যাখোনা ঋজুদার নির্ঘাৎ মাথার গোলমাল হয়েছে। মেয়ে-ফেয়ে নিয়ে আফ্রিকার জঙ্গলে যেতে চায়। ভুষুণ্ডার গুলি খেয়ে নিজেই একেবারে গুলিখোর হয়ে গেছে। মেয়েরা–
মা আমাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, বীরপুরুষ! আমিও কিন্তু মেয়ে। বীরপুরুষের মা। মেয়ে বলে কি মানুষই নয় তিতির? আমি ওর কথা শুনেছি নীপাদির কাছে। সবদিক দিয়ে খুবই ভাল মেয়ে। তার মা-বাবার আপত্তি না থাকলে তোর আপত্তির কী? মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে কোন দিক দিয়ে ছোট?
আমি হাল ছেড়ে দিলাম। গভীর চক্রান্ত। ঘরে-বাইরে অতি সুগভীর চক্রান্ত চলেছে আমার বিরুদ্ধে।
.
সাতটা নাগাদ গিয়ে ঋজুদার ফ্ল্যাটে পৌঁছতেই অ্যালবিনোর মালোয়াঁমহল-এর বিষেণদেওবাবু আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন। বললেন, আও বেটা, মেরে লাল।
তিতির আমাকে দেখে বলল, হাই! রুদ্র।
দেখলাম, একটা রঙ-চটা জিনস্ পরেছে। উপরে হলুদ গেঞ্জি! মাথায় পনিটেইল।
আমি উদার হাসি হেসে বললাম, ভাল আছ? প্রযতদা কেমন?
জবাব না দিয়ে ও বলল, তুমি কেমন আছ বলো। ডিবেটে হেরে গিয়ে খুব রেগে রয়েছ বুঝি এখনও?
ঋজুদা কথা ঘুরিয়ে বলল, আমাদের সকলেরই এক্ষুনি একবার বেরোতে হবে তিতির। আমার ডিরেক্টর অব অপারেশানস্ তোমার রাইফেল ও পিস্তল শুটিং-এর পরীক্ষা নেবেন।
আমি? বললাম, লজ্জায় মরে গিয়ে।
ঋজুদার মতো অন্যকে বে-আব্রু, বে-ইজ্জত করতে আর কেউই পারে না।
ঋজুদা গদাধরকে বলল, গদাধর, রাইফেল, পিস্তল সব গাড়িতে তোল। বিষেণদেওবাবু যে রাইফেলটা এনেছেন, সেটাও।
গদাধর ভিতরে গেল।
ঋজুদা দেওয়ালে ঝোলানো রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারটাকে দেখিয়ে বিষেণদেওবাবুকে বললেন, বিষেণদেওজি, মুলিমালোঁয়ার অ্যালবিনো বাঘ রুদ্রবাবু মারতে পারেনি ঠিকই, কারণ বাঘ তো সেখানে ছিলই না; কিন্তু এই বাঘটি ওরই মারা। সুন্দরবনের ম্যান-ইটার। গদাধরের বাবাকে এই বাঘই খেয়েছিল, বনবিবির বনে।
বিষেণদেওবাবু স্তুতির চোখে তাকালেন আমার দিকে।
চোখের আড়ালে দেখলাম, তিতির সেনের চোখেও অ্যাপ্রিসিয়েশান ঝিলিক মারছে। ভাবলাম, মেয়েটাকে যতখানি নাক-উঁচু ভাবতাম, ততখানি সত্যি-সত্যি না-ও হতে পারে।
তিতির আমার দিকে প্রশংসার চোখে চেয়ে বলল, সত্যি। কী সাহস তোমার রুদ্র! আই অ্যাডমায়ার য়ু।
গাড়িতে উঠতে উঠতে বললাম, এই ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে রাতের বেলা শুটিং কমপিটিশান করতে কোথায় যাবে ঋজুদা? চাঁদও নেই; অন্ধকার, তার উপর এই দুর্যোগ?
ঋজুদা বলল, আমাদের ভুষুণ্ডা-চাঁদ তো তোমাকে উজ্জ্বল চাঁদনি রাতে দেখা না-ও দিতে পারে? যাচ্ছি, জেঠুমণির কোনচৌকির খামারবাড়িতে, ডায়মণ্ডহারবার রোডে। ঘণ্টা-দেড়েকের মধ্যেই ফিরে আসব।
জোকা পেরিয়ে একটু গিয়েই ডান দিকে কোনচৌকিতে ঋজুদার জেঠুমণির খামারবাড়ির সামনে পঁচিশ একরের ধানখেত। চারপাশে বিরাট গভীর নালা। বাঁধের মতো আছে। প্রায় একশো গজ দূরে একটা ঝাঁকড়া পেয়ারা গাছে চারকোনা টিনের ছোট-ছোট বাক্সর উপর সাদা রঙ করে দড়ি দিয়ে ঝোলানো। প্রবল ঝোড়ো হাওয়ায় ডালপালা উথাল-পাতাল করছিল। টিনগুলোও পাগলের মতো নাচানাচি করছিল। দূর থেকে মনে হচ্ছিল, কতগুলো সাদা বিন্দু।
প্রথমে আমি। ঋজুদা বলল। বলেই, থ্রী-টু পিস্তলটা খাপ থেকে বার করে নিয়ে পরপর তিনটি গুলি করল ওয়াড-কাটার দিয়ে।
একটিও লাগল না।
আমি বুঝলাম, ঋজুদা ইচ্ছে করেই মিস করল। তার মানে, আফ্রিকাতে তিতিরকে নিয়ে যাবেই। তিতির মিস্ করলে বলবে, যা দুর্যোগ! অন্ধকার! আমিই পারলাম না, তা ও কী করে পারবে। কী চক্রান্ত। তাহলে আর মিছিমিছি এসব ঢং কেন?
এবার রুদ্র। ঋজুদা বলল। কিন্তু কোন্ ওয়েপন দিয়ে মারবি? বিষেণদেওবাবুর নতুন প্রেজেন্ট টু-সেভেন্টিফাইভ রাইফেল দিয়েই মার। তোকে হ্যান্ডিক্যাপ দেব– নতুন রাইফেল–প্র্যাকটিস্ করার সুযোগ পাসনি। রাইফেল জিরোয়িং করাও হয়নি। ওক্কে? বাট ওনলি থ্রী শটস্! মাত্র তিনটি গুলি।
রাইফেলটা তুলে নিলাম। গুলি ভরলাম ম্যাগাজিনে। কোথাও কোনো আলো নেই। খামারেরও সব আলো নিভোনো। শেডটার নীচে দাঁড়িয়েও মুখে-চোখে ঝোড়ো হাওয়ায় জলের ঝাপটা লাগছে। টিনগুলো ক্রমাগত দুলছে। প্রথম গুলি, মিস্। দ্বিতীয় গুলি করতেই দনদন করে একটা টিন কথা বলল। তৃতীয় গুলি মিস।
ঋজুদা বলল, ওয়েল ডান্। ভেরি ওয়েল ডান্, ইনডিড। এই ওয়েদারে অন্ধকারে।
তারপর তিতিরকে বলল, তিতির, তোমার রাইফেলটা দিয়েছে তো গদাধর?
হুঁ।
আমি বললাম, কী রাইফেল?
পয়েন্ট টু-টু। তিতির বলল।
বললাম, ওঃ। অনেক লাইট রাইফেল। এ তো খেলনা।
তিতির সঙ্গে সঙ্গে কথাটার মানে বুঝল। বুঝেই, ঋজুদার দিকে তাকাল। বলল, ঋজুকাকা, আমার রাইফেলে মারা অনেক সহজ হবে। রুদ্র যে রাইফেলে মারল, আমিও সেই রাইফেলেই মারব–আমার কাছেও তো এটা নতুন।
ঋজুদা বলল, দ্যাটস্ ভেরি স্পোর্টিং অব হার ইনডিড!
আমি আমার নিজের ব্যবহারে লজ্জিত হলাম। খুশিও হলাম এই কারণে যে, এই রাইফেল দিয়ে তিতির একটি গুলিও লাগাতে পারবে না। পয়েন্ট টু-টু রাইফেল, ছোটবেলায় আমাদের সাউথ-ক্যালকাটা রাইফেল ক্লাবের ক্যাপ্টেন বসুঠাকুর থুতনির উপর বসিয়েই বলে-বলে কাক মারতেন।
তিতির রাইফেলটা একটু নেড়েচেড়ে দেখে নিল। তারপর তুলে এইম করল। দেখলাম, চমৎকার হোলডিং। তারপর, আমি যা করিনি, ফ্লাইং শট নেবার সময় যেমন ব্যারেল সুইং করে মারতে হয়, তেমনভাবে দু-একবার শ্যাডো সুয়িং করে নিয়েই পরপর র্যাপিড ফায়ার করে তিনটে গুলি করল। কী হল, তা বোঝবার আগেই দন দনাদ্দন, দন্ দনাদ্দন, দন দনাদ্দন করে তিনটি টিনই আওয়াজ দিল।
বিষেণদেওবাবু পিছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে বলে উঠলেন, শাব্বাশ, শাব্বাশ! শাব্বাশ বেটি।
আমার গলার কাছে লজ্জা ও অপমান এবং হেরে-যাওয়ার গ্লানি দলা পাকিয়ে উঠল। তবুও মুখ দিয়ে নিজের অজান্তেই র্যাপিড-ফায়ারের গুলির মতোই বেরিয়ে গেল : কনগ্রাচুলেশন্স!
তিতির বলল, রুদ্র, আমি শুনেছি ঋজুকাকার কাছে, তুমি আসলে আমার চেয়ে অনেক ভাল মারো। আমার আনতাবড়ি গুলিগুলো আজ বাই-চান্স লেগে গেছে।
ঋজুদা আর একটু সময় নষ্ট না করে, পাছে আমি আর কোনো আপত্তি তুলি, তাড়াতাড়ি বলে উঠল, তাহলে তিতির যাচ্ছে আমাদের সঙ্গে? কী বলো ডিরেক্টর?
আমি তো আর পরীক্ষা নিতে চাইনি। তুমিই এসব করলে, এখন আমার ঘাড়ে চাপাচ্ছ?
ঋজুদার ফ্ল্যাটে আমরা খেতে বসলাম, বিষেণদেওবাবুর সঙ্গে অনেক গল্প-টল্প করার পর বিষেণদেওবাবু বললেন, তোমরা আফ্রিকাতে যাবার আগে তিতির-বেটিকে আমার পয়েন্ট থ্রী-টু কোল্ট পিস্তলটা পাঠিয়ে দেব মুলিমালোঁয়া থেকে। ভানুপ্রতাপই নেই। আমি আর অতগুলো রেখে কী করব। শিকার তো আমি ছেড়েই দিয়েছি কবে। ঋজুবাবু, আপনি শুধু ওর লাইসেন্সের বন্দোবস্তটা করে রাখবেন।
ঋজুদা বলল, তিতির অল-ইন্ডিয়া রাইফেল শুটিং কমপিটিশানে ফার্স্ট হয়েছিল। আর্ল-রবার্ট ক্যাডেট-ট্রফিও ও পেত, জ্বর না হলে। অতএব লাইসেন্স কোনো প্রবলেম নয়।
তিতির বলল, আমার ছোট দাদু ওয়েস্ট বেঙ্গলের হোম-সেক্রেটারি। লাইসেন্স পেতে অসুবিধা হবে না। বলেই, রান্নাঘরে গিয়ে আমাদের জন্যে এমন নরম আর ফার্স্ট ক্লাস ওমলেট বানিয়ে আনল মাশরুম, চিকেন, কাঁচা পেঁয়াজ, টোম্যাটো আর কাঁচালঙ্কা দিয়ে যে, খেয়ে অবাক হয়ে গেলাম।
বিষেণদেওবাবু বললেন, স্ট্রিক্ট ভেজিটারিয়ানও ঐ ওমলেট খাবে। ভারী উমদা বানালে বেটি!
ঋজুদা বলল, গদাধর, ইমপ্রুভ কর, রান্না শিখে নে; নইলে, তোর চাকরি যাবে। আমার দিকে চেয়ে বলল, মিস্টার ডিরেক্টর সাহেব, তাহলে, যে-রাঁধে সেও যে কভি-কভি চুল বাঁধতে পারে, এ-কথা স্বীকার করছ?
ফেঁসে গেলাম। ঋজুদার কাজই এই।
মুখে বললাম, কী বলছ বুঝতে পারছি না।
বলেই হেসে উঠলাম। হাসতেও যে এত কষ্ট হয়, তা আগে কখনও জানিনি।
