ভূতনাথের ডায়েরি

ভূতনাথের ডায়েরি – অনীশ দেব

আমার নাম প্রিয়নাথ জোয়ারদার। বিজ্ঞান যেখানে শেষ, সেইখান থেকে আমার কৌতূহল ও আগ্রহের শুরু। ছোটবেলা থেকেই ভূতে আমার ভীষণ ভয়। অশরীরী, অলৌকিক, ভূত, প্রেত, পিশাচ আমাকে ভীষণ ভয় পাইয়ে দিত। আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধবের কাছে যখনই এ-জাতীয় কোনও কাহিনি শুনতাম তখনই খুব ভয় পেতাম। পরে বড় হয়ে, কাঠমাণ্ডুর এক সন্ন্যাসীর পরামর্শে, আমি ভূত-প্রেতের ভয় কাটানোর জন্য অভিনব এক পথ ধরি—ভূত-প্রেতের খোঁজ করে বেড়ানো।

সুতরাং সেই পঁচিশ-ছাব্বিশ বছর বয়েস থেকেই আমার ভূতচর্চার কাজ শুরু হয়েছে। আজ, এই পরিণত বয়েসে এসেও সে-কাজ থামেনি। এই তিন যুগ সময়ে কখন যেন আমার নাম ‘প্রিয়নাথ’-এর বদলে ‘ভূতনাথ’ হয়ে গেছে। সমবয়েসি বা গুরুজনরা সামনেই ‘ভূতনাথ’ বলে ডাকেন। আর, ছোট যারা, তারা বলে আড়ালে। আমি তাতে কিছু মনে করি না। বরং বেশ মজা পাই।

প্রায় পঁয়ত্রিশ-ছত্রিশ বছর ধরে ভূত-প্রেত, অশরীরী-অলৌকিক নিয়ে আমার কম অভিজ্ঞতা হল না। তা ছাড়া ভূত-প্রেতের বহু কাহিনিও আমি শুনেছি। সেই সব অভিজ্ঞতা ও কাহিনি আমি যত্ন করে লিখে রেখেছি বারোটা মোটা-মোটা বাঁধানো খাতায়—অনেকটা ডায়েরির মতন। মাঝে-মাঝে সেই খাতাগুলোর পাতা উলটে স্মৃতিচারণ করি।

সম্প্রতি আমার আলাপ হয় এক কলমচির সঙ্গে। আলাপ করে জানলাম, তিনি নাকি বানিয়ে-বানিয়ে ভূতের গল্প লেখেন। তখন আমি হেসে আমার খাতাগুলোর কথা তাঁকে বলি। শুনে তাঁর উৎসাহ দ্যাখে কে! আমার মিনমিনে ওজর-আপত্তি অগ্রাহ্য করে তিনি খাতাগুলো নিয়ে যান। যাওয়ার আগে বলে গেলেন, ‘ডায়েরির লেখাগুলো ঘষে-মেজে কল্পনার প্রলেপ দিয়ে সামান্য রদবদল করে একে-একে আমি লিখব। আপনার কোনও আপত্তি শুনব না।’

ভদ্রলোক আমার চেয়ে বয়েসে অনেক ছোট। তাই একরকম স্নেহের বশেই তাঁকে আমি অনুমতি দিয়েছি। আমার ডায়েরির পৃষ্ঠায় কাহিনিগুলো বন্দি না থেকে সকলের সামনে প্রকাশ করলে ক্ষতি কী!

 

মনের মতো বউ (ভূতনাথের ডায়েরি) – অনীশ দেব Moner moto bou golpo story Anish Deb

মনের মতো বউ (ভূতনাথের ডায়েরি) – অনীশ দেব

‘পাওয়া ভারী দুষ্কর।’ পান চিবোতে-চিবোতে মন্তব্য করলেন বরেন মল্লিক। ‘কেন, মনের মতো বউ পাওয়া দুষ্কর কেন?’ চায়ের কাপে লম্বা চুমুক দিয়ে জানতে চাইলেন প্রিয়নাথ। সুপ্রকাশ পালিতের বৈঠকখানায় বসে কথা হচ্ছিল। সময়টা চৈত্র মাস। সামনের বৈশাখে বরেন মল্লিক তাঁর বড় ছেলের…

Read Moreমনের মতো বউ (ভূতনাথের ডায়েরি) – অনীশ দেব
কনে-দেখা আলোয় (ভূতনাথের ডায়েরি) – অনীশ দেব Kone dekha aloy golpo story Anish Deb

কনে-দেখা আলোয় (ভূতনাথের ডায়েরি) – অনীশ দেব

‘সব মেয়েকেই ভালো দেখায়।’ ছোট হয়ে-আসা বিড়িতে জোরালো টান দিয়ে মন্তব্য করলেন জগৎ শ্রীমানী। ‘কনে-দেখা আলো কাকে বলে জানতে পারি কি?’ বরেন মল্লিক পান চিবোচ্ছিলেন—একটু খোঁচা দিয়েই প্রশ্নটা ছুড়ে দিলেন জগৎ শ্রীমানীর দিকে। আলোচনাটা শুরু হয়েছিল পাড়ার রবিশঙ্করবাবুর মেয়ের বিয়ে…

Read Moreকনে-দেখা আলোয় (ভূতনাথের ডায়েরি) – অনীশ দেব
সামান্য কুয়াশা ছিল (ভূতনাথের ডায়েরি) – অনীশ দেব Samanyo kuasa chilo golpo story Anish Deb

সামান্য কুয়াশা ছিল (ভূতনাথের ডায়েরি) – অনীশ দেব

আগাম কোনও খবর না দিয়েই বর্ষা এবার সময়ের আগেই হাজির। আর শুধু হাজির নয়, ইনিংসের প্রথম বল থেকেই একেবারে ঝোড়ো ইনিংস খেলতে শুরু করেছে। যেমনই বৃষ্টির জোর তেমনই হাওয়ার দাপট। শুরুতে অবশ্য এতটা বোঝা যায়নি। বিকেল পড়ে আসার আগেই সুপ্রকাশ…

Read Moreসামান্য কুয়াশা ছিল (ভূতনাথের ডায়েরি) – অনীশ দেব
আঁধারে মায়ার খেলা (ভূতনাথের ডায়েরি) – অনীশ দেব Adhare mayar khela golpo story Anish Deb

আঁধারে মায়ার খেলা (ভূতনাথের ডায়েরি) – অনীশ দেব

প্রিয়নাথ বসবার ঘরে ঢুকতেই ভদ্রলোক-ভদ্রমহিলা সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন। সৌজন্য দেখিয়ে হাতজোড় করে প্রিয়নাথ বললেন, ‘সরি, আপনাদের অনেকক্ষণ বসে থাকতে হল। আসলে এ-সময়টা আমি পুজো করি।’ ‘না, না—তাতে কী আছে!’ ভদ্রলোক হেসে বললেন, ‘আমরাই আধঘণ্টা আগে চলে এসেছি।’ ওঁরা সোফায়…

Read Moreআঁধারে মায়ার খেলা (ভূতনাথের ডায়েরি) – অনীশ দেব
অলক্ষণের গণ্ডি (ভূতনাথের ডায়েরি) – অনীশ দেব Alokhoner gondi golpo story Anish Deb

অলক্ষণের গণ্ডি (ভূতনাথের ডায়েরি) – অনীশ দেব

লক্ষ্মণের গণ্ডির কথা তো আপনারা সবাই জানেন। ওই গণ্ডির বাইরেই ওত পেতে ছিল যত বিপদ। কিন্তু আমি এখন আপনাদের শোনাতে বসেছি অলক্ষণের গণ্ডির কথা—যে-গণ্ডির ভেতরে অজানা এক বিপদ প্রায় একশো বছর ধরে অষ্টপ্রহর ওত পেতে রয়েছে। ঘটনাটা আমাকে শুনিয়েছিল প্রায়…

Read Moreঅলক্ষণের গণ্ডি (ভূতনাথের ডায়েরি) – অনীশ দেব
ভয় পাওয়া মানুষ (ভূতনাথের ডায়েরি) – অনীশ দেব ভূতের গল্প Voypaoa manush Golpo Story Anish Deb bangla vuter golpo

ভয় পাওয়া মানুষ (ভূতনাথের ডায়েরি) – অনীশ দেব

চিৎকারটা শুনেই প্রিয়নাথ জোয়ারদার থমকে দাঁড়িয়ে পড়লেন। চিৎকারটার মধ্যে যেন হিম বরফকুচি মেশানো ছিল। চিৎকারটা যতক্ষণ ধরে চলছিল ততক্ষণের জন্য করিডরের আলোটা যেন মলিন হয়ে গেল—হঠাৎ ভোল্টেজ কমে গেলে যেমন হয়। তারপর, সেই ভয়-পাইয়ে-দেওয়া চিৎকারের রেশ শেষ হলে, বালবটা আবার…

Read Moreভয় পাওয়া মানুষ (ভূতনাথের ডায়েরি) – অনীশ দেব