(বাঁশরী) ছেলেবেলায় পৃথ্বীশের ডান দিকের কপালে চোট লেগেছিল ভুরুর মাঝখান থেকে উপর পর্যন্ত। সেই আঘাতে ডান চোখটাও সংকুচিত। পৃথ্বীশকে ভালো দেখতে কি না সেই প্রশ্নের উত্তরটা কাটা দাগের অবিচারে সম্পূর্ণ হতে পারল না। অদৃষ্টের এই লাঞ্ছনাকে এত দিন থেকে প্রকাশ্যে…
দুপুর যখনই বিকেলে গড়িয়ে যায়, বিশেষ করে বনেজঙ্গলে, তখনই চুয়ার মন বড়ো খারাপ লাগে। স্বল্পায়ু বিকেলও দেখতে দেখতে মরে যায়, উষ্ণতা মরে যায়; সোনা ঝরে যায়। ঘন গভীর বনের বুক থেকে ময়ূর আর বনমোরগের ডাক ভেসে আসে। বড়ো গাছেদের গা-জড়ানো…
এক চৈত্রের দুপুরে জনমানবহীন ছোটনাগপুরের মালভূমিতে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছিলাম। মাথার ওপর আগুন, পায়ের তলা পুড়ছে। যেদিকে তাকাই খাঁ-খাঁ শূন্যতা। সবুজের চিহ্ন নেই। প্রকৃতি যে কত রুক্ষ হতে পারে তার একটা ধারণা হয়েছিল তখন। তোমায় দেখে আজ সেই ছবিটাই মনে এল।…
প্রিয়াংকার খুব খারাপ ধরনের একটা অসুখ হয়েছে। অসুখটা এমন যে কাউকে বলা যাচ্ছে না। বললে কেউ বিশ্বাস করবে, কিংবা বিশ্বাস করার ভান করে আড়ালে হাসাহাসি করবে। একজনকে অবিশ্যি বলা যায়। জাভেদকে। জাভেদ তার স্বামী। স্বামীর কাছে কিছু গোপন থাকা উচিত…
—ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ— শেষ দিন আজ অনুপমার শেষ দিল। এ সংসারে সে আর থাকিবে না। জ্ঞান হইয়া অবধি সে সুখ পায় নাই। ছেলেবেলায় ভালবাসিয়াছিল বলিয়া নিজের শান্তি নিজে ঘুচাইয়াছিল; অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করিয়াছিল বলিয়া বিধাতা তাহাকে একতিলও সুখ দেন নাই।…
—পঞ্চম পরিচ্ছেদ— চন্দ্রবাবুর সংসার তিন বৎসর পরে খালাস হইয়াও ললিতমোহন বাড়ি ফিরিল না। কেহ বলিল, লজ্জায় আসিতেছে না। কেহ বলিল, সে গ্রামে কি আর মুখ দেখাতে পারে? ললিতমোহন নানা স্থান পরিভ্রমন করিয়া দুই বৎসর পরে সহসা একদিন বাটীতে…
