ইয়াজদার্গিদের হিরে (কিশোর কর্নেল) – সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ
ছয়
প্রথমে ভেবেছিলাম একটা বিকট দুঃস্বপ্ন দেখছি। চাঁদের আলোয় জায়গাটা মোটামুটি স্পষ্ট। আমার নিম্নাঙ্গ নিঃসাড়। ঠান্ডায় জমে গেছে। তারপর বুঝলাম আমার কোমর পর্যন্ত বালিতে পোঁতা এবং হাত দুটো পেছনে বাঁধা। যন্ত্রণা টের পেলাম। তখন সব কথা মনে পড়ে গেল। ডাকলাম, হালদারমশাই! হালদারমশাই!
কোনার দিকে ছায়া। সেখান থেকে হালদারমশাইয়ের করুণ সাড়া এল, আছি।
একটা কিছু করা দরকার, হালদারমশাই।
হালদারমশাই রুগির গলায় অতি কষ্টে বললেন, চব্বিশ ঘণ্টা পোঁতা আছি জয়ন্তবাবু। পায়ে একটুও শক্তি নাই।
আপনাকে কোথায় ধরেছিল?
সি বিচে কাইল রাত্তিরে অগো ফলো কইরা কইরা বিপদ বাধাইছি।
এই সময় বাইরে ধুপধুপ শব্দ কানে এল। হালদারমশাই চাপা গলায় বললেন। চুপ কইরা থাকেন। চক্ষু খুলবেন না।
চোখ বোজার আগে দেখে নিলাম, দুটো লোক আসছে। একজনের কাঁধে মড়ার মতো কেউ ঝুলছে। তারা ঘরে ঢুকলে চিনতে পারলাম। রাজেন অধিকারী এবং তার দানো। দানোর কাঁধে আর একজন মড়ার মতো লোক। রাজেন অধিকারী হুংকার দিল তখনকার মতো। অমনই দানোটা মড়া নামিয়ে বালিতে গর্ত খুঁড়তে থাকল। গর্তটা সে হাত দিয়েই খুঁড়ছিল। বুঝলাম, রাজেন অধিকারীর হুংকার সম্ভবত বিজ্ঞানী চন্দ্ৰকান্তের ভাষায় সোনিম। বিশেষ ধ্বনিতরঙ্গের সাহায্যে হুকুম জারি।
দানোটা যাকে আমাদের মতো কোমর পর্যন্ত পুঁতে হাত দুটো পেছনে বাঁধল, সে যে মড়া নয় তা একটু পরে বুঝলাম। রাজেন অধিকারী তাকে বলল, হিরে কোথায় লুকিয়ে রেখেছে, না বলা পর্যন্ত এই অবস্থায় থাকো।
সে হি হি করে হেসে উঠল।
শাট আপ। পাগলামি ঘুচিয়ে দেব। বলো হিরে কোথায়?
বলব না!
না বললে দাদা বলে খাতির করব না আর।
ইস! আমি তোর সত্যিকার দাদা নাকি? বেশি জাঁক দেখাসনে রাজু। সব ফাঁস করে দেব। যখন বাপ-মা মরে ফ্যা-ফ্যা করে ঘুরে বেড়াচ্ছিলি, তোকে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে নিয়ে গিয়ে মানুষ করেছিলাম। তুই নেমকহারাম!
চুপ! টাম্বোকে হুকুম দিলে এখনই তোমার মুণ্ডু মুচড়ে দেবে।
তাই দে না। মলে তো বেঁচে যাই। ওরে হতভাগা তোর বাবার আত্মার সঙ্গে আমার সবসময় দেখা হয় জানিস! দাঁড়া! ডাকছি তাকে। প্রমথ! প্রমথ! কাম অন! তোমার হারামজাদা পুত্রটিকে এসে শায়েস্তা করো দিকি।
শাট আপ! বলো হিরে কোথায় লুকিয়ে রেখেছ?
হিরে তোর বাপের? নওরোজিসায়েবের সঙ্গে চক্রান্ত করে ম্যাডানসায়েবের হিরে চুরি করেছিলি। ওই ভূতটাকে দিয়ে নওরোজিকে মারলি। শেষে ম্যাডানসায়েবকে মারলি। পাপের ভয় নেই তোর?
রাজেন অধিকারী ফুঁসে উঠল। তুমিও কম পাপী নও। আমার ল্যাব থেকে হিরে চুরি করে ম্যাডানসায়েবকে চিঠি লিখেছিলে এখানে আসতে। তুমি থাকো ডালে-ডালে, আমি থাকি পাতায়-পাতায়। এবার ম্যাডানসায়েবের জামাইকে হিরে ফেরত দেওয়ার চক্রান্ত করেছ। সে-খবরও আমি রাখি, যাক গে বলো-হিরে কোথায় রেখেছ?
হালদারমশাই বলে উঠলেন, বসন্তবাবু! আপনি ভুল করছেন। হিরে কলকাতায় ম্যাডানসায়েবেরে দিয়া দিলেই পারতেন। এই ট্রাবল হইত না!
রাজেন অধিকারী ঘুরে দাঁড়াল। তবে রে ব্যাটা টিকটিকি! বলে তেমনই হুংকার দিতেই টাম্বো গিয়ে হালদারমশাইয়ের চুল খামচে ধরল। হালদারমশাই আর্তনাদ করলেন।
বসন্তবাবু বললেন, আপনি ভালো বলেছেন মশাই! কলকাতায় হিরে দিলে এই রাজু ব্যাটাচ্ছেলে ঠিক টের পেয়ে যেত। ওর যন্তরমন্তরে সব ধরা পড়ে যেত। সেজন্যেই গোপালপুরে আসতে লিখেছিলাম। আমার চেনা জায়গা। তা আপনাকে দেখছি জ্যান্ত পুঁতেছে? হিহি-হোহো করে একচোট হাসার পর বসন্তবাবু এতক্ষণে আমাকে দেখতে পেলেন। বললেন, মলো ছাই। এ আবার কে? ও রাজু! একে কেন পুঁতলি?
রাজেন অধিকারী তেড়ে এল। চুপ! এই শেষবারের মতো বলছি, বলো হিরে কোথায়?
বসন্তবাবু ভেংচি কেটে বললেন, তোর বাপের হিরে? দাঁড়া তোর বাপের আত্মাকে ডাকি। সে নিজে এসে বলুক, হিরে কার? বলে ঘাড় ঘুরিয়ে সমুদ্রের দিকে তাকালেন। চাপা গলায় বললেন, রাতবিরেতে তোর বাপ পাখি হয়ে সমুদ্রের ওপর চক্কর দিয়ে বেড়ায়। আমি নিজের চোখে দেখছি। তা জানিস?
রাজেন অধিকারী বলল, তাহলে মরো! টাম্বো! টাম্বো! টাম্বো!
তার হাতে টর্চের মতো একটা জিনিস থেকে নীলচে আলো জ্বলে উঠল। তারপর যা দেখলাম, শিউরে উঠলাম। দানোটা হালদারমশাইয়ের চুল ছেড়ে দিয়ে বসন্তবাবুর সামনে এসে দাঁড়াল এবং পকেট থেকে কী একটা বের করল। সেটা আর কিছু নয়, একটা কালো রঙের ছোটো সাপ। সাপটার লিকলিকে জিভ। বসন্তবাবুর মুখের কাছাকাছি সে সাপটাকে নিয়ে গেল। বসন্তবাবু আর্তনাদ করলেন, প্রমথ! প্রমথ! বাঁচাও!
তিনি সম্ভবত রাজেন অধিকারীর বাবার প্রেতাত্মাকে ডাকার জন্য সমুদ্রের দিকে মুখ ঘোরালেন। তারপরই চেঁচিয়ে উঠলেন, ওই সে আসছে! ওই দ্যাখ রাজু। পাখি হয়ে তোর বাপ উঠে আসছে।
অতিকষ্টে মুখ ঘুরিয়ে দেখি, কী অদ্ভুত। সমুদ্রের আকাশে বিশাল লম্বা ডানাওলা একটা পাখি উঠে আসছে এই বালিয়াড়ির দিকে।
রাজেন অধিকারী পাখিটাকে দেখামাত্র হুংকার দিল। তখন দানোটা এক লাফে বাইরে চলে গেল। নীলচে আলোটা নিভিয়ে রাজেন অধিকারীও বেরোল। বাইরে এক পলকের জন্য চোখ ঝলসানো আলো দেখলাম। সেই আলোয় দেখতে পেলাম, কেউ রাজেন অধিকারীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। তারপর ধস্তাধস্তি, হাঁকডাক, বালিতে ধুপধুপ শব্দ। জ্যোৎস্নায় অনেক ছায়ামূর্তির ছুটোছুটি।
হালদারমশাই চাপা স্বরে বলে উঠলেন, খাইছে!
সেই সময় বাইরে কর্নেলের সাড়া পেলাম। জয়ন্ত! জয়ন্ত!
চেঁচিয়ে বললাম, এখানে! এখানে!
টর্চের আলো এসে পড়ল আমাদের ওপর। তারপর কর্নেলকে দেখতে পেলাম। বললেন, কী সর্বনাশ! হালদারমশাইকেও পুঁতেছে দেখছি।
হালদারমশাই শ্বাস ছেড়ে বললেন, হঃ!
কয়েকজন পুলিশ ঘরে ঢুকে বাঁধন খুলে দিয়ে বালি সরিয়ে আমাদের ওঠাল। আমি পা ছড়িয়ে বসলাম। হালদারমশাই কিন্তু তড়াক করে উঠে দাঁড়িয়ে পা ছোঁড়াছুড়ি করে বললেন, আই অ্যাম অলরাইট। বাট হেভি ক্ষুধা পাইছে।
বসন্তবাবু উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, যাই। প্রমথের আত্মাকে দেখা করে আসি।
কর্নেল বললেন, বসন্তবাবু! প্রমথ কে?
ওই শয়তানটা রাজুর বাবা। বড্ড ভাল লোক ছিল মশাই। না, না! যাই দেখা করে আসি। পর-পর দু’বার পাখি হয়ে উড়ে এল আমার সঙ্গে দেখা করতে।
.
বসন্তবাবু বেরিয়ে গেলেন। আমি উঠে দাঁড়ালাম। মাথা কেমন ঝিমঝিম করছে। পা বাড়াতে গেছি, হঠাৎ পায়ের কাছে কর্নেলের টর্চের আলোয় সেই সাপটাকে দেখতে পেলাম। চমকে উঠে সরে গেলাম। কর্নেল সাপটাকে কুড়িয়ে নিয়ে বললেন, এ-ও কিন্তু কৃত্রিম সাপ জয়ন্ত! তবে টাম্বোর মতো নয়। জেনোম থিয়োরির সঙ্গে এটার সম্পর্ক নেই। এটা নেহাত খেলনা সাপ। চলো, বেরোনো যাক।
বাইরে গিয়ে দেখি, পুলিশের দঙ্গল ছায়ামূর্তির মতো বিচের দিকে নেমে যাচ্ছে। একটা দেওয়ালের আড়াল থেকে সি আই ডি অফিসার সুরঞ্জনবাবু বেরিয়ে এলেন। বললেন, সায়েন্টিস্ট ভদ্রলোকের কাণ্ডকারখানা দেখছিলাম কর্নেল। দিনে-দিনে পৃথিবীটা ওঁরা একেবারে অন্যরকম করে দিচ্ছেন। মাথা ঠিক রাখা কঠিন।
কর্নেল বললেন, চন্দ্রকান্তবাবুর চেয়ে সেরা বিজ্ঞানী এখন আপনাদের হাতে মি. দাস! শিগগির গিয়ে ওঁকে আর্মির কর্নেল সিংহের জিম্মায় রাখার ব্যবস্থা করুন। কিছু বলা যায় না। পুলিশের হাজত ওকে আটকে রাখার মতো শক্ত জায়গা নয়। রাজেন অধিকারী এ-যুগের এক জাদুকর বিজ্ঞানী।
সুরঞ্জনবাবু হন্তদন্ত চলে গেলেন। আমরা সামনে বালির টিলার দিকে যাচ্ছিলাম। টিলার মাথায় কেউ দাঁড়িয়ে আছে। জ্যোৎস্নায় আবছা দেখা যাচ্ছে তাকে। কর্নেল ডাকলেন, বসন্তবাবু!
কোনও সাড়া এল না। কাছে গিয়ে আবার কর্নেল বললেন, বসন্তবাবু। দেখা হল প্রমথবাবুর আত্মার সঙ্গে?
বসন্তবাবু গলার ভেতর বললেন, নাহ। দেরি দেখে প্রমথ উঠে গেল। ওই দেখুন যাচ্ছে।
জ্যোৎস্নার সমুদ্রের আকাশে সেই বিশাল পাখিটাকে ক্রমশ দুরে কুয়াশায় মিলিয়ে যেতে দেখলাম। হালদারমশাই চমকানো গলায় বলে উঠলেন, কী? কী?
কর্নেল হাসলেন। পাখি নয়, হালদারমশাই। হ্যাং গ্লাইডার।
সঙ্গে-সঙ্গে আমার মনে পড়ে গেল, বিজ্ঞানী চন্দ্ৰকান্তের যে একটা হ্যাং গ্লাইডার আছে। কী ভুলো মন আমার। বললাম, কর্নেল, তা হলে মারিয়াম্মা যে ভূতুড়ে পাখির কথা বলছিল–।
আমার কথার ওপর কর্নেল বললেন, ডার্লিং। তুমি সবই বোঝো। তবে দেরিতে। চন্দ্রকান্তবাবু কলকাতা থেকে হ্যাং গ্লাইডারে চেপে এসেছিলেন। এখন ফিরে যাচ্ছেন।
বসন্তবাবু পা বাড়িয়ে বললেন, যাই। ম্যাডানসায়েরের জামাই আমার জন্য অপেক্ষা করছে। ওকে ওর শ্বশুরের হিরে ফেরত দিই গে।
কর্নেল বললেন, হিরে উনি ফেরত পেয়েছেন বসন্তবাবু।
কী বললেন? বসন্তবাবু হি-হি হো-হো করে বেজায় হাসতে লাগলেন। হিরে ফেরত পেয়েছে? কী করে পাবে মশাই? এমন জায়গায় লুকিয়ে রেখেছি, কার সাধ্যি খুঁজে বের করে?
যাকে আপনি প্রমথবাবুর আত্মা বললেন, তিনিই খুঁজে বের করেছেন। ব্যাকওয়াটারের ওখানে একটা মন্দিরের ভেতর আপনি পুঁতে রেখেছিলেন। কালো রঙের একটা ছোট্ট কৌটোতে। তাই না?
সর্বনাশ। বলে বসন্তবাবু দৌড়ে বিচে নামতে থাকলেন।
কর্নেল চেঁচিয়ে বললেন, বরং ম্যাডানসায়েবের জামাই যে-বাংলোতে উঠেছেন, সেখানে চলে যান বসন্তবাবু।
হালদারমশাই এদিকে-ওদিকে তাকিয়ে চাপা স্বরে বললেন, এখানে থাকা ঠিক না, কর্নেল সার। হেভি ক্ষুধা পাইছে। তাছাড়া আমার সন্দেহ হয়। রাজেন অধিকারীর ভূতটা কোথাও ঘাপটি পাইত্যা-বইয়্যা রইছে। পুলিশ অরে ধরতে পারে নাই।
টাম্বোকে চন্দ্রকান্তবাবু লেজার পিস্তলের একটা শটেই ছাই করে দিয়েছেন হালদারমশাই।
অ্যাঁ? কই? কই?
কাল সকালে এসে দেখবেন। চলুন, এবার ফেরা যাক।
কর্নেল আমাদের সোজা নিয়ে গিয়েছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রীমশাইয়ের সেই বাংলোতে। কুসরো অপেক্ষা করছিলেন কর্নেলের জন্য। ড্রয়িংরুমে ঢুকে দেখি, বসন্তবাবু খুশি-খুশি মুখে বসে পা দোলাচ্ছেন এবং মিটিমিটি হাসছেন। আমাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করা ছিল। ডিনার টেবিলে বসে হালদারমশাই খাদ্যে মন দিলেন। কর্নেল বললেন, বসন্তবাবু আমাদের গতরাতে ঢিল ছুঁড়ে ভয় দেখাচ্ছিলেন কেন বলুন তো?
বসন্তবাবু মুরগির ঠ্যাং কামড়ে ধরে বললেন, টিল নয়। ছোটো-ছোটো বালির গোটা।
কিন্তু কেন?
আপনারা আমার কাজে বাগড়া দেবেন ভেবেছিলাম। বুঝলেন না? পুলিশ এতে নাক গলাক, এটা আমার পছন্দ নয়। পুলিশ যদি জানতে পারত, আমার কাছে হিরে আছে, কেলেঙ্কারি হত না? আমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে বেদম পিটিয়ে কথা বের করে ছাড়ত। ওরে বাবা! আমি পুলিশ দেখলেই কেটে পড়ি।
আর একটা কথা বসন্তবাবু!
বলুন। আমার মন খুব ভালো হয়ে গেছে। সব কথার জবাব দেব।
আপনি হিরের কথা কী জানতে পেরেছিলেন?
রাজুর কাছে প্রায়ই একটা লোক আসত। দুজনে চুপিচুপি কথা হত। আড়াল থেকে শুনতাম। পরে বুঝলাম, কী সাংঘাতিক চক্রান্ত চলেছে। লোকটা নাকি আমেরিকার কোন সায়েবের কাছে জানতে পেরেছে, কুসরোসায়েবের শ্বশুর কোনও সম্রাটের হিরে কিনেছেন। সেই হিরে চুরির মতলব করেছে ওরা। কী যেন নাম লোকটার? নও… নও… দুচ্ছাই!
কুসরো বললেন, নওরোজিসায়েবের কিউরিয়য়া শপ আছে। বিদেশে তার অনেক চর আছে। তাদেরই কেউ খবরটা দিয়ে থাকবে- ভদ্রলোক আমার শ্বশুরের চেনা লোক ছিলেন। এদিকে আমার শ্বশুরও তত চতুর মানুষ ছিলেন না। মনে হচ্ছে, কোনও কথায় মুখ ফসকে হিরের কথা তিনিও বলে থাকবেন। এমনকী, হিরেটা দেখিয়েও থাকবেন।
বললাম, নওরোজির সঙ্গে কীভাবে রাজেনবাবুর পরিচয় হল?
কর্নেল বললেন, নওরোজির এক ভাই আমেরিকায় ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে জেনেটিক্সের অধ্যাপক। সেখানেই রাজেনবাবু রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট ছিলেন। গত মাসে সেই অধ্যাপক কলকাতা এসেছিলেন। নওরোজি সেই উপলক্ষে পার্টি দেন। রাজেনবাবুও পার্টিতে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। এসব খবর নিয়ে তবে গোপালপুরে ছুটে এসেছিলাম।
বসন্তবাবু বললেন, রাজু বরাবর এইরকম স্বার্থপর।
কর্নেল বললেন, নওরোজি নিশ্চয় জানতেন না, টাম্বো কৃত্রিম মানুষ। টাম্বোকে তাহলে গুলি করতেন না।
বসন্তবাবু বললেন, শয়তান রাজু নও.. নও, দুচ্ছাই! রাজু সেই লোকটাকে একদিন বলেছিল, হিরে চুরি গেছে। কে চুরি করেছে? না- ওর অ্যাসিস্ট্যান্ট ওই ভূতটা। কাজেই মারো গুলি! দে বডি ফেলে। হি হি হি হি। বডি ফেলতে গিয়ে নিজেরই বডি পড়ে গেল। হো হো হো হো…।
হালদারমশাই এতক্ষণে বললেন, হঃ। বডি পড়া স্বচক্ষে দেখছিলাম। সে ক্কী পড়া।
কর্নেল বললেন, আপনার বডিও পড়ে যেত। জোর বেঁচে গেছেন।
হঃ। বলে হালদারমশাই জলের গ্লাস তুলে নিলেন।
